লর্ডসের ব্যালকনির দিকে তাকিয়ে আছেন জিমি। তার পুরো পরিবার সেখানে দাঁড়িয়ে। তবে আজকের ব্যাপারটা বেশ আলাদা। লর্ডসের ব্যালকনিতে তাকিয়ে মুচকি হাসছেন অ্যান্ডারসন। আজকের ম্যাচে বেল বাজানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জিমির দুই মেয়ে লোলা ও রুবিকে।
প্রথামাফিক লর্ডসের বেল বাজানো হয় কোন তারকার হাতে। কিন্তু জিমির ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট হিসেবে জিমির প্রতি সম্মান রেখে তার দুই মেয়েকে দিয়ে বেল বাজানো হয়েছে। সেই সাথে মাঠে তাট পরিবারের উপস্থিতি। সব মিলিয়ে বেশ আবেগাপ্লুত দেখা গেছে জিমিকে।
প্রায় ২১ বছর আগে ২০০৩ সালের ২২ মে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লর্ডসে অভিষেক হয় জিমি অ্যান্ডারসনের। ২১ বছর পর সেই লর্ডসেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছেন জিমি। ১৮৮ টেস্টে ঝুলিতে পুড়েছেন ৭০০ উইকেটের মাইলফলক। যদিও এখনও বেশ ফর্মেই আছেন জিমি। এরপরও ইংলিশ বোর্ড থেকে তাকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। অনায়াসে আরও বছর দুয়েক খেলার ক্ষমতা রাখেন ৪১ বছর বয়সী জিমি। কিন্তু অনিচ্ছাসত্ত্বেও তরুণদের জায়গা করে দিতে সরে যেতে হবে তাকে।
ইংল্যান্ড টস জেতার পর বোলিং নেয়। দলের সবার আগে মাঠে নামেন জিমি। গ্যালারি থেকে সবাই উচ্ছ্বসিত হয়ল দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান। করতালিতে মুখরিত হয় চারপাশ। জিমি আবেগাপ্লুত, তবে তিনি কাঁদেন নি। যদিও বিমর্ষতার পরশ পাওয়া যাচ্ছিলো তার চোখে-মুখে। অনেকটা কষ্ট করেই মুখে হাসি রেখেছিলেন ঐ সময়টায় জিমি। ক্রিকেটের বর্ণিল সৌন্দর্য্য সবসময় বহমান থাকবে। তবে বল হাতে ক্ষিপ্রগতির জেমস মাইকেল অ্যান্ডারসনকে আর দেখা যাবেনা বাইশ গজে। ১৮৮টি টেস্ট তাও ৪১বছর বয়সী কোন পেসার খেলবেন, ঝুলিতে ৭০০ উইকেট পুড়বেন। এমনটা কি কখনো কেউ ভাবতে পেরেছিলো আগে?
জিমি এসেছেন এবং ২১বছরের ক্যারিয়ারে এই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন। লর্ডসে শুরু হওয়া যুবকের বীরত্ব গাঁথার ইতি সেই লর্ডসেই হচ্ছে। ক্রীড়াপ্রেমিদের জন্য হয়তো জিমির প্রস্থান অনেক কষ্টকর। তবে একটা সময় সবাইকেই থামতে হয়। জিমিও এর ব্যাতিক্রম নেন। তাই আগামী জীবনের জন্য শুভ কামনা ছাড়া আর বিশেষ কিছু জিমিকে দেওয়া যাচ্ছে না৷
শুভ বিদায় জিমি- বাইশগজের রোলারকোস্টার।