
রোদেলা এক দুপুর। বাতাসে ক্রিকেটের গুঞ্জন, মাঠে সমবেত দর্শকের চিৎকারে জমজমাট চট্টগ্রামের ইস্পাহানি মাস্টার্স টি-টোয়েন্টি। সবাই অপেক্ষায় এক উত্তেজনাকর ম্যাচের, কিন্তু কেউ কি জানত—এই দিনটাই রচবে এক অবিশ্বাস্য ক্রিকেট নাটক?
চিটাগাং লিজেন্ড যখন ব্যাটিংয়ে নামে, তখন কারও চোখেই ছিল না জয়ের স্পষ্ট ছবি। একের পর এক উইকেট পড়ে যেন কেউ ব্যাটে রান নয়, টানছিল ব্যর্থতার সুর। ২০ ওভার শেষে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। গ্যালারিতে তখন ফিসফাস—”ম্যাচটা বুঝি একপেশে হতে চলেছে।”
কিন্তু ক্রিকেট, সে তো ভবিষ্যৎ জানে না—গল্পের মোড় ঘোরে বল হাতে। আর সেই মোড় ঘোরানোর নায়ক ছিলেন ইমতিয়াজ উদ্দিন। বল হাতে যখন মাঠে নামলেন, তার চোখে ছিল আগুন, মনে ছিল প্রতিজ্ঞা—এই ছোট পুঁজি দিয়েই ইতিহাস লিখতে হবে!
জবাবে ব্যাট করতে নেমে সিএম গোল্ড শুরুটা খেই হারায়। তারপর হাফিজুর রহমান হীরা ও সবুজ নন্দীর ব্যাটে একটু আশা ফিরে আসে। স্কোরবোর্ডে রান জমছে, সময় তাদের পক্ষে। কিন্তু হঠাৎই যেন থমকে যায় সেই গতি—একটি, দুটি করে উইকেট, রানআউটের হঠাৎ হুলুস্থুল, আর ইমতিয়াজের বল হাতে ধ্বংসের রূপ!
৪ উইকেট তুলে নিয়ে তিনি প্রতিপক্ষ শিবিরে হানা দেন ঘূর্ণিঝড়ের মতো। সিএম গোল্ড তখন যেন গন্তব্যহীন এক নৌকা, কেবল ভেসে যাচ্ছে হার নিশ্চিত করে। শেষ মুহূর্তে আমিনের ১৩ রানের এক ক্ষীণ চেষ্টা—তাও বৃথা।
শেষ বাঁশি বাজে—৮ রানের এক চিত্তাকর্ষক জয় তুলে নেয় চিটাগাং লিজেন্ড। সেই মুহূর্তে মাঠজুড়ে শুধু একটাই নাম—ইমতিয়াজ উদ্দিন। তাকে যখন ম্যাচসেরার পুরস্কার দেন সাবেক তারকা ফজলে বারি খান রুবেল, দর্শকদের করতালিতে যেন বলা হয়, “এটাই ক্রিকেট, এটাই অসম্ভবকে সম্ভব করার খেলা!”
একটুখানি রান, একচিলতে আশায়—আজও লেখা হয় জয়গাঁথা।