ক্রিকেট বিস্ময়কর খেলা। ক্রিকেটে হরহামেশা নানা বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। আর যারা ঘটায় তারা ক্রীড়ামোদীদের কাছে সমাদৃত হন। ক্রিকেটকে যারা ভালোবাসতে শিখিয়েছেন, ক্রিকেটের প্রতি আবেগ তৈরি করেছেন, যাদের ইনিংস চোখের প্রশান্তি তাদের মাঝে মাহেলা জয়াবর্ধনে একজন। সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের একজন তিনি। যার প্রতিটি ইনিংস মনমাতানো।
১৯৭৭ সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেছেন এই সাবেক তারকা। সাবেক এই লঙ্কান তারকা দুর্দান্ত ব্যাটারের পাশাপাশি দুর্দান্ত একজন ফিল্ডার ছিলেন। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যার ২১৮টি ক্যাচ লুফে নেওয়ার অনন্য কীর্তি রয়েছে। যা এখনও অমর।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের ইতিহাসে মাহেলা-সাঙ্গা জুটি বেশ সমাদৃত। দীর্ঘ সময়ের ক্যারিয়ারে সতীর্থ সাঙ্কাকারাকে নিয়ে দারুণ সব ইনিংস খেলেছেন তিনি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে শতক করার দুর্লভ রেকর্ড তালিকায়ও তিনি রয়েছেন।
টেস্ট ক্রিকেটে একবার ক্রিজে সেট হয়ে গেলে তাকে আউট করা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার ছিল। দীর্ঘদিন দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। দলের প্রয়োজনে তিনি বিভিন্ন পজিশনে খেলেছেন। একবার উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ার পর দুর্দান্ত ইনিংস খেলে মাতিয়েছেন পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে।
সনাথ জয়াসুরিয়া এবং কুমার সাঙ্গাকারা’র পর ৩য় লঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে তিনি ওয়ানডেতে দশ হাজার রান করেছেন।
১৯৯৫ সালে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেন। ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে পরপর ৪টি শতক করে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলে ডাক পান। ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন টেস্ট ফরম্যাট দিয়ে।
২০০৬ সালে নিজ দেশে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলা ৩৭৪ রানের ইনিংস তাকে টেস্ট ফরম্যাটে অনন্য মর্যাদা দান করেছে। ঐ ইনিংসে দ্বিতীয় উইকেট তথা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যে-কোন উইকেটে সবচেয়ে দীর্ঘতম জুটি গড়েন তিনি। সেই ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতম জুটি হিসেবে সাঙ্গাকারা’র সাথে ৬২৪ রানের ইনিংস খেলেন।
২০০৬ সালে আইসিসি মাহেলা জয়াবর্ধনেকে বর্ষসেরা আন্তর্জাতিক অধিনায়কের নাম ঘোষণা করে। পরবর্তী বছরে বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেট খেলোয়াড়ের মনোনয়ন লাভ করেছিলেন।
২০০৯ সালে মার্চ-এপ্রিল মাসে পাকিস্তান সফরে মাহেলা জয়াবর্ধনে টেস্ট সিরিজের নেতৃত্ব দেন। ঐ সিরিজে তিনি দ্বি-শতক করেন। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টের পর তিনি অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর তিনি পুনরায় অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
টেস্ট ক্রিকেট এবং ওয়ানডেতে ১০হাজার+ রান করেছেন। টি-২০ ক্রিকেটেও প্রায় ১৫০০ (১৪৯৩) রান করেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে তার ১৬টি সেঞ্চুরি, এবং টেস্ট ক্রিকেটে ৩৪টি সেঞ্চুরি রয়েছে। যার মধ্যে টেস্টে ৬টি দ্বি-শতক এবং ১টি ত্রি-শতরান রয়েছে।
ব্যাট হাতে জাদু দেখানো এই জাদুকরের বিশেষ দিনে জানাই শুভেচ্ছা।