Google search engine

 

সময়টা ১৯৯২ বিশ্বকাপ। তরুণ এক অভিষিক্ত প্রোটিয়া খেলোয়াড় উড়ন্ত বাজপাখির মতো ঝাঁপিয়ে ইমজামামকে রানআউট করছে, যে দৃশ্য আজও সবার চোখে রঙিন আর তরতাজা।

কথায় বলে- “Practice makes a man perfect” । এই প্রবাদ যেন তার সাথেই মানায়। উপর থেকে উড়ন্ত বাজের মতো ঝাঁপিয়ে উল্টোদিক থেকে রান আউট করা, এমন দৃশ্য এর আগে কেউ হয়ত কল্পনা করেনি। আর এই অবাক বিস্ময়ের নাম ছিলো জন্টি রোডস।

পুরো নাম জোনাথন নেইল রোডস। ১৯৬৯ সালের ২৭শে এপ্রিল ফিল্ডিং জাদুকর জন্টি রোডস দক্ষিণ আফ্রিকার নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণ করেন। ফিল্ডিংকে যিনি নিয়ে গেছিলেন শিল্পের পর্যায়ে। যার জন্য করেছেন কঠোর পরিশ্রম।

নিজ শহরের কোন এক একাডেমির মাঠে নিয়মিত পরিশ্রম করতেন। কখনোবা মাঠেট এমাথা থেকে ঐ মাথা দৌড়াচ্ছেন, কখনো ফিজিক্যাল স্ট্রেচিং করছেন, কখনো ক্যাচ প্রাকটিস করছেন, কখনোবা বল থ্রোয়িং। দিনের পর দিন পরিশ্রম করে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে ঝালাই করেছেন। যে কারণে সারা ক্রিকেটবিশ্বে সুখ্যাতি পেয়েছেন বিস্ময়কর ফিল্ডার হিসেবে।

কথায় বলে ক্রিকেট শৈল্পিকতার খেলা। আর ফিল্ডিং জগতে শৈল্পিকতার অনন্য এক দৃষ্টান্ত জন্টি রোডস। যদিওবা তৎকালীন সময়ে প্রোটিয়া দলে সুযোগ পাওয়াটাকে তিনি নিতান্তই ভাগ্য হিসেবে ধরে থাকেন। বর্তমানে প্রোটিয়া ক্রিকেটে কৃষ্ণাঙ্গদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হলেও তখন প্রোটিয়া ক্রিকেটে শেতাঙ্গদের রাজত্ব ছিল।

মাঝে দীর্ঘদিন নিষেধাজ্ঞায় ছিলেন। সেখান থেকে ফিরেও তখন এই অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। তাই সে সময়কালীন দলে থাকাটাকে নিজের ভাগ্য বলেই ধরে নেন তিনি। তিনি মনে করেন কৃষ্ণাঙ্গরা প্রতিযোগী হিসেবে না থাকাতে তার জাতীয় দলের অংশ হওয়া অনেকাংশে সহজ হয়ে গিয়েছিল।

নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে ‘উড়ন্ত বাজপাখি ‘ এবং ‘মারিৎসবার্গ মাম্মা’ নামে সুপরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু এত দুর্দান্ত হওয়ার পরও তিনি ভাবতেন তিনি অতি সাধারণ। যদিও তিনি সর্বকালের সেরা ফিল্ডারদের একজন। ফিল্ডিং বাদ দিলে, ব্যাট হাতেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। দলের প্রয়োজনের সময়ে ত্রাণকর্তারূপে আবির্ভূত হয়েছেন অনেকসময়। বল হাতে যদিওবা খুব একটা বিশেষ কিছু করতে পারেন নি।

ক্যারিয়ারে ওয়ানডেতে ২৪৫ টি ম্যাচে ৩৫.১১ গড়ে ২টি শতক ও ৩৩টি অর্ধশতকসহ সংগ্রহ করেছেন ৫৯৩৫ রান। ৫২ টি টেস্টে ৩৫.৬৬ গড়ে ৩টি শতক ও ১৭টি অর্ধশতকসহ সংগ্রহ করেছেন ২৫৩২ রান।

ফিল্ডিংয়ে আউটফিল্ডার হিসেবে সর্বমোট ২৯৭ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৩৯টি ক্যাচ নিয়েছেন। যার মধ্যে টেস্টে ৩৪ টি এবং ওয়ানডেতে ১০৫ টি। তবে থ্রো করে রানআউটে তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। সে হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিনি ৬৮টি রানআউটে সম্পৃক্ত ছিলেন।

সবশেষে, জন্টি ছিলেন মাঠের উড়ন্ত বাজপাখি। যার ক্ষিপ্র ছোবলে উড়ে গেছে অনেক বাঘা বাঘা ক্রিকেটার। দুর্দান্ত থ্রোয়িং করে প্রতিপক্ষ দলের শিবিরে ত্রাস সৃষ্টিতে তিনি ছিলেন অনন্য।

শুভ জন্মদিন ক্রিকেটের উড়ন্ত বাজপাখি জন্টি রোডস।

Google search engine

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here