২০২২ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটলো আরও একবার। আরও একবার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে টিকে রইলো বাংলার বাঘিনীরা। ম্যাচের আগে সবার স্যোশাল মিডিয়া পোস্টে একটা লাইন কমন ছিলো – “আবার যাতে ট্রফি নিয়ে ফিরতে পারে, অক্ষত রাখতে পারে টাইটেল জয়ী খেতাব”। মাঠে হলোও তাই। নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে হার না মেনে লড়াই করে গেছে বাঘিনীর মতোই।
প্রতিপক্ষ একই, একই মাঠ। সবাই অপেক্ষায় ছিলো আরও একবার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই দেখার। অন্যদিকে নেপাল মুখিয়ে ছিলো হয়তো প্রতিশোধের অপেক্ষায়। দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালের দর্শকের পরিপূর্ণ সারিতে শিরোপার লড়াইয়ে বেশ ভয়ডরহীন দেখা গেলো সাবিনার দলকে। পুরো আসরে অপ্রতিরোধ্য থেকে ফাইনালেও এর ব্যতিক্রম হলনা। গ্যালারিভর্তি নেপালীদের স্তব্ধ করে দিয়ে আরও একবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ধরে রাখলো বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধে ইঁদুর-বিড়ালের লড়াই গোলশূন্য হয়ে শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই স্কোরের জন্য মুখিয়ে থাকে। পাল্টাপাল্টি আক্রমণে ৫১তম মিনিটে মনিকা চাকমার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এর আগে অনেকবার নিজে গোল বানিয়ে দিলেও নিজে গোল পেতেন না বলে বেশ আক্ষেপ করতেন মনিকা। এবার ফাইনালে সেই স্বাদ পূর্ণ হলো। সংঘবদ্ধভাবে গোল তৈরির পর পায়ের বল জালে জড়ান।
এর তিন মিনিট পর নেপাল সমতায় ফেরে। চারপাশে তখন টানটান উত্তেজনা। নেপালীদের উচ্ছ্বাসে তখন স্টেডিয়াম পরিপূর্ণ। এর মাঝে কয়েকবার গোল করার চেষ্টা হলেও ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। নেপালীরাও সুবিধা করতে পারেনি। এরপর ৮২ মিনিটে বেশ দুর্দান্ত এক শটে গোল করেন ঋতুপর্ণা। নেপালের গোলরক্ষক চেষ্টা করেও আটকাতে পারেননি। উৎসবে মেতে উঠে বাংলাদেশ। বাকি সময়টা গোলহীন কাটে দু’দলের। ২-১ গোলে অসাধারণ জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পায় বাংলাদেশ।
এই মেয়েদের বেতন আটকে থাকা নিয়ে গত কয়েকদিন আগেও কথা হচ্ছিলো। আক্ষেপে খেলাও ছেড়েছেন কয়েকজন। অথচ, পুরুষ দলের ক্ষেত্রে যেন ভিন্ন চিত্রই দেখা যায়। সবরকম সুবিধা পেয়েও আশানুরূপ ফলাফল করতে পারছেনা পুরুষ দল। ক্রিকেট বা ফুটবল সবখানেই মেয়েদের গন্ডিটা বেশ সীমিত। অথচ মেয়েদের হাত ধরেই বড় বড় শিরোপা এসেছে। এরপরও কেন জানি স্পন্সরদেরও উদাসীনতা মেয়েদের নিয়ে। যদিও এর কারণটা অজানা, তবে প্রত্যাশা থাকবে দু-দুবার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার পর ভালো একটা কিছু অবশ্যই তারা প্রাপ্য। আর তাদের যোগ্য প্রাপ্যতা তাদের দেওয়া হোক। দেশবাসী অপেক্ষায় রয়েছে বিজয়ীদের দেশে ফেরার।