কথায় বলে প্রতিটি দলের সফলতার জন্য একজন ভালো ফিনিশার দরকার। যে দলকে ভালো ফিনিশিং টাচ দিবে। এগিয়ে নিয়ে যাবে জয়ের দৌড়গোড়া পর্যন্ত। মাইকেল বেভান ছিলেন তার সময়কার সেরা ফিনিশার। বর্তমানে যদিও তুলনা করতে গেলে খোদ তিনিই বলেন মাহিন্দ্র সিং ধোনি সর্বকালের সেরা ফিনিশার। তবে বেভান সেরাদের মাঝে অনন্য একজন।
জন্ম নিয়েছেন ১৯৭০ সালের আজকের দিনে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরির বেলকনেনে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন ১৯৯৪ সালে। তিনি ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। সাথে বাঁহাতি লেগস্পিনও(চায়নাম্যান) করতেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে মাইকেল বেভান অনন্য এক নাম। সবসময় দুর্দান্তভাবে ম্যাচ শেষ করে আসতেন বলে সতীর্থরা ভালোবেসে নাম দিয়েছিলেন ‘দ্য টার্মিনেটর’। শুধু নিজ দলেরই নয়, ওয়ানডে ইতিহাসে তিনি অন্যতম সেরা স্পেশালিষ্ট। দীর্ঘ ১৩বছরের ক্যারিয়ারে শেষ দিকে নেমে দলকে বহু ম্যাচ জিতিয়েছেন।
মাইকেল বেভানের নাম শুনতেই অজি ক্রিকেটের স্বর্ণযুগের কথা মনে আসে। স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে থাকা দাপুটে সেই অস্ট্রেলিয়া। যাকে রুখে দেওয়া অনেকটা দুঃসাধ্য ব্যাপার ছিল। ওপেনিংয়ে গিলক্রিস্ট; বোলিংয়ে ওয়ার্ন, ম্যাকগ্রা, ক্যাসপ্রোউইচ আর মিডল অর্ডারে বেভানের দুঃসাহসিক ইনিংস। যিনি একা হাতেই অনেক পরাজয় রুখেছেন শক্ত দেয়াল হয়ে।
দীর্ঘ ১০বছর দলে ম্যাচ জয়ের নায়ক হয়ে ছিলেন। যত বিরূপ পরিস্থিতিই আসুক না কেন বেভান সামলেছেন শক্ত হাতে। এ কারণেই মূলত দলে তাকে ‘দ্য টার্মিনেটর’ ডাকা হত। যিনি রান মেশিন হিসেবে দলকে বহুবার জয়ের স্বাদ দিয়েছেন।
ওয়ানডেতে ২৩২ ম্যাচ খেলে ৫৩.৫৮ গড়ে সংগ্রহ করেছেন ৬৯১২ রান। যেখানে ৪৬ টি অর্ধশতক এবং ৬টি শতক ছিল। মিডল অর্ডারে নেমে নট আউট থেকেছেন ৬৭ টি ওয়ানডে ইনিংসে। ২০০৭ সালে তিনি অবসর নেওয়ার আগে ওয়ানডেতে ৫০ এর বেশি ব্যাটিং গড় কেবল তার দখলেই ছিল। তিনি ১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন।
১৯৯৬ সালের ফাইনালে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল বেভানের। সেবার সেমি ফাইনালে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে দলের সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন বেভান৷ শেন ওয়ার্নের বেলিং তোপে সেদিন ম্যাচটি জিতে যায় অজিরা। ফাইনালে জিততে না পারলেও ৩৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন বেভান৷
ক্যারিয়ারে নট আউট থেকে নিজ দলকে বহু ম্যাচ জেতান। দুর্দান্ত সব ইনিংস তাকে করেছে ওয়ানডে ক্রিকেটে সেরাদের সেরা। সময়ের সাথে তিনি ক্রিকেটকে বিদায় জানালেও রয়ে গেছেন ক্রীড়া প্রেমীদের হৃদয় গহীনে।